জগন্নাথপুরের খবর ডেক্সঃ
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার হালির হাওরে টিউবওয়েল দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে। ছবি : কালবেলা
দুর্গম হাওরের গভীর নলকূপ থেকে অনবরত উঠছে পানি। চাপতে হচ্ছে না টিউবওয়েল, কিংবা লাগছে না কোনো মেশিন বা বৈদ্যুতিক শক্তি। এই টিউবওয়েল থেকে এভাবেই এক-দুদিন নয়, টানা দুই বছর ধরে অনবরত পানি পড়ছে। সম্প্রতি এই টিউবওয়েলের পাশেই আরেকটি গভীর নলকূপ বসানো হলে সেটি দিয়েও পানি পড়ছে অনবরত। এত পরিমাণ পানি উঠছে যে মনে হতে পারে যান্ত্রিক শক্তির মাধ্যমে তোলা হচ্ছে পানি।
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার হালির হাওরে এ দৃশ্য দেখো গেছে। হাওরটিতে দুটি টিউবওয়েল থেকে অবিরত পানি উঠছে। এই হাওরে শুকনো মৌসুমে অস্থায়ী কাঁচাঘর তৈরি করে বসবাস করেন কিছু কৃষক। তাদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে দুই বছর আগে সরকারিভাবে টিউবওয়েল বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
পরে চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে আগের টিউবওয়েল থেকে আনুমানিক ৫০০ ফুট দূরে একটি ডিপ টিউবওয়েল বসানোর কাজ শুরু হয়। তখন এটা দিয়েও কোনো কারণ ছাড়াই পানি বের হওয়া শুরু করে। এতে ভয়ে সব কাজ বন্ধ করে দেন তারা।
টিউবওয়েলের মুখে কাপড় বেঁধে ওপরের অংশে দিয়াশলাই ধরলেই জ্বলে উঠে আগুন। স্থানীয়দের ধারণা এ জায়গায় মাটির নিচে রয়েছে গ্যাসের মজুত। পানিতে গ্যাসের দুর্গন্ধ থাকায় হাওরের কৃষকদের এই পানি পান করা বেশ কষ্টসাধ্যও। শুধু গ্যাসই নয়, এই পানিতে খনিজ পদার্থ থাকায় কিছুটা লালচে।
এদিকে এভাবে ২ বছর ধরে গ্যাস বের হলেও নজর নেই বাপেক্সের। প্রতিষ্ঠানটির ভূতাত্ত্বিক বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার আলমগীর হোসেনকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি বলেন, কেউ অফিসিয়ালি তাদের জানালে তখন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেবেন তারা।
আর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সমর কুমার পাল জানান, হাওরে গ্যাস উদ্গিরণের বিষয়টি তাদেরও নজরে এসেছে। এরই মধ্যে ইউএনওকে প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর চিঠির মাধ্যমে পেট্রোবাংলাকে জানাবেন তারা।
দুর্গম হাওর এলাকায় এভাবে গ্যাস উদ্গিরণ যে কোনো সময় বিপদও হতে পারে। আবার দিনের পর দিন প্রাকৃতির সম্পদ নষ্টের বিষয়ে নিশ্চয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নেবেন, এমনটাই প্রত্যাশা হাওরবাসীর