স্টাফ রিপোর্টারঃ-
জগন্নাথপুর উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ সহকারি শিক্ষকবৃন্দকে জোড়পূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করা এবং প্রতিষ্ঠানে প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির প্রতিবাদে “শিক্ষক সমন্বয় পরিষদ, জগন্নাথপুর” এর পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষক সমন্বয় পরিষদ, জগন্নাথপুর” এর পক্ষে ১১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে এ স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, সাম্প্রতিককালে রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পট পরিবর্তনের ফলে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং সহকারি শিক্ষকগণকে জোড়পূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করাসহ বিভিন্ন ধরণের হুমকি ধমকি এমনকি প্রতিষ্ঠানের কক্ষে বন্দি করে রাখার ন্যাক্কারজনক ঘটনার ন্যায় আমাদের জগন্নাথপুর উপজেলায়ও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-জনতার নামে কতিপয় বিশৃংখলা সৃষ্টিকারীদের আক্রোশের শিকার হন প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ সহকারি শিক্ষকগণ।
যা উপজেলার অতীত গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে ম্লান করে দিচ্ছে। আমরা স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষকগণের পক্ষ থেকে এহেন জোড়পূর্বক পদত্যাগের অপচেষ্টা, বিভিন্নভাবে হুমকিসহ অযাচিত হস্তক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জগন্নাথপুর উপজেলায় রাণীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুস সামাদকে প্রতিষ্ঠানে আসতে বাধা প্রদান এবং স্বেচ্ছায় পদত্যাগের হুমকি দেয়া হচ্ছে। পাইলগাও বি.এন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুল হালিমকে ছাত্র-জনতা পদত্যাগের অপচেষ্টা করে এবং স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে অস্বীকার করলে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা তাঁকে স্কুলের একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখে।
সংবাদ পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর সদস্য ও পুলিশ ফোর্স তাঁকে উদ্ধার করেন। লামাটুকের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমীন ভূইয়াকে গত ২৭ আগস্ট জোর পূর্বক পদত্যাগের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তিনি বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন। ইসহাকপুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রাসেল তালুকদারকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের জন্য হুমকি এবং পদত্যাগ না করলে স্কুলে প্রবেশ করতে পারবেনা ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
এমতাবস্থায় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষার্থে আক্রান্ত প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং সহকরি শিক্ষকগণের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে বিশৃংখলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন। স্মারকলিপি প্রদানকালে হলিয়ারপাড়া জা. কা. সুন্নীয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ মঈনূল ইসলাম পারভেজ, পাটলী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: নজির উদ্দিন আহমেদ, সৈয়দপুর সৈয়দিয়া শামছিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. সৈয়দ রেজওয়ান আহমদ, শফাত উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: শব্বীর আহমদ চৌধুরী,
ইকড়ছই জামেয়া ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো: সাইফুল ইসলাম,
শ্রীরামসী উচ্চ বিদ্যালয় এণ্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো: হাজের আলী, চিলাউড়া দারুস সুন্নাহ আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো: তাজুল ইসলাম আলফাজ, ষড়পল্লী স্কুল এণ্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো: হারুন অর রশীদ, জয়দা আরাবিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো: মখছুছুল করীম চৌধুরী, অরুনোদয় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: নসির আলী, চরা জামেয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো: সালেহ আহমদ উপস্থিত ছিলেন। সদয় অবগতির জন্য জেলা প্রশাসক সুনামগঞ্জ, ক্যাপ্টেন সেনাবাহিনী ক্যাম্প, জগন্নাথপুর ও অফিসার ইনচার্জ জগন্নাথপুর থানায় প্রেরণ করা হয়েছে।