আল আমিন জগন্নাথপুর প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জ জেলা হাওর বেষ্টিত একটি জনবহুল কৃষি নির্ভর অঞ্চল কৃষির বৃহৎ একটি অংশ হেমন্তের সময়ও পানির নিচে থাকে। তবুও ধান চাষের পাশাপাশি মৌসুমি শাকসবজি চাষের সম্ভবনাও রয়েছে।
দ্বিগুণ লাভের আশায় জগন্নাথপুর উপজেলার অনেক কৃষক আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করেন প্রতি বছর। এবার সবজির বাজার অনেক চড়া। আর চড়া বাজারে আরও বেশী লাভের আশায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চারা রোপণ করছেন কৃষকেরা। বিশেষ করে জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ও পাইলগাঁও ইউনিয়নের
কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী এলাকাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রতিবছরই শাকসবজি চাষাবাদ হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি সবজি চাষাবাদ হয় পাইলগাঁও ইউনিয়নে।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি শীতকালীন শাকসবজি চাষাবাদের মৌসুমে উপজেলার ৪৫০ হেক্টর জমিতে আলু, শিম, টমেটো, মরিচ, ধনিয়া পাতা, লালশাক, মুলা, বেগুনসহ শাকসবজি চাষাবাদ করা হয়েছে। বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকদের সাথে আলাপ করলে তারা জানান, এবার বন্যা এবং অতিবৃষ্টির কারণে আগাম মৌসুমি শাকসবজি চাষাবাদ করা সম্ভব হয়নি। এছাড়াও আমনধান কাটা শেষ হলেই তারা শীতকালীন শাকসবজি চাষাবাদ করবেন।
পাইলগাও ইউনিয়নের পাইলগাও গ্রামের কৃষক রমিজ আলী বলেন, প্রতিবছরই প্রায় ২০/২৫ বিঘা জমিতে ধানের পাশাপাশি শাকসবজি চাষাবাদ করি। এর মধ্যে কাঁচা মরিচ, টমেটো, ধনিয়াপাতা ইত্যাদি ফসল চাষ করে লাভবান হয়েছি।রানীগঞ্জ ইউনিয়নের বাগময়না গ্রামের কৃষক আজাদ মিয়া বলেন, বারো মাসই শাকসবজি চাষ করি। বর্তমানে পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, করলা, শিম, লালশাক, লাউ ও টমেটো চাষ করেছি। মৌসুমি শাকসবজি চাষাবাদ করেই পরিবার চলে।
জগন্নাথপুর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার সুমন চন্দ্র দাস বলেন, শীতকালীন সবজি চাষে এলাকায় গিয়ে সঠিক পদ্ধতি ও পরিচর্চা বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। এলাকার কৃষি জমির পরিমাণ বাড়ছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মোঃ রাজন আকন্দ বলেন, আমরা সবজি চাষে কৃষকদের অনুপ্রাণিত করছি। রবি মৌসুমে সবচেয়ে বেশি সবজি চাষাবাদ হয়। জগন্নাথপুর উপজেলা একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকা। হঠাৎ বন্যা বৃষ্টি কৃষিকে বাধাগ্রস্ত করে। তবুও শীতকালীন শাকসবজি চাষাবাদে অধিক সম্ভবনারয়েছে।
চাষাবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় অনাবাদি জমির পরিমাণ কমছে। জগন্নাথপুর উপজেলায় মিরপুর, পাটলী ও রানীগঞ্জ ইউনিয়নে এবার প্রথম বস্তায় আদা চাষ করা হয়েছে। প্রায় দুই হাজার বস্তায় আদা চাষ হয়েছে প্রতি বস্তায় ১০ কেজি ওজন এর মতো ফলন হচ্ছে । নতুন প্রযুক্তি হিসেবে প্রতিটি পরিবারের চাহিদা মেটাতে বস্তায় আদাসহ বিভিন্ন শাকসবজি চাষাবাদ করা যেতে পাড়ে। আমরা জগন্নাথপুর কৃষি অফিস সব সময় প্রস্তুত আছি কৃষকের পাশে।