বিশেষ প্রতিনিধিঃ
প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার অঙ্গীকারে বদলে গেছে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
অবকাঠামোগত উন্নয়নে যেমন এগিয়ে তেমনি নিরাপত্তা ও আধুনিকতায় এগিয়ে রয়েছে। একটি সময় ছিল জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবার কোনো পর্যাপ্ত জিনিসপত্র বা জনবল ছিল না, দুর্ভোগে পড়তে হতো সেবা নিতে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনদের। এই সেই কথাটি ভুলতে বসেছে জগন্নাথপুর উপজেলার সাধারণ মানুষ। সেবার মানের সাথে এই হাসপাতালে নিয়মিত বাড়ছে রোগী। দৈনিক সেবাপ্রার্থী হাজার ছাড়িয়েছে।বর্তমানে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও দৈনিক ভর্তি রোগীর সংখ্যা প্রায় ৫০এর কাছাকাছি। ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ছিল ২০/৩০ জন এবং বহির্বিভাগে সেবা নিয়েছেন ৩৫০/৪৫০ জন রোগী দেখা হচ্চে প্রতিদিন ৫০ শয্যার জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মানোন্নয়ন ও চিকিৎসাসেবা আরো বৃদ্ধির জন্য ১০০ শয্যা হাসপাতালের জন্য আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সারমিন আরা আশা এছাড়া থেকে এই হাসপাতালে সিজার বন্ধ চিলো। সম্প্রতি চালু রয়েছে ডেলিভারি কার্যক্রম। ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মাস হতে সমীকরণে দেখা যায় ৯৭টিরও বেশি সিজার সফলতার সাথে হয়েছে অন্যদিকে নরমাল ডেলিভারি করা হয়েছে ৯০/১০০টিরও বেশি রোগীকে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারী মাস জগন্নাথপুর হাসপাতাল জাতীয় সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলা এর মোধে 11 টি উপজেলা তে জগন্নাথপুর হাসপাতাল প্রথম হয়েছে রোগীদে সেবা পরিচালনায়।
জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ, বিভাগ ও বহির্বিভাগের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং সৌন্দর্যবর্ধন সার্বিক কার্যক্রম তদারকির মাধ্যমে জগন্নাথপুর স্বাস্থ্য খাতের ইতিহাসে এক অনন্য সুন্দর সফলতা বলে আখ্যা দিচ্ছে স্থানীয়রা।
বিনামূল্যে সিজার অপারেশন করছে জগন্নাথপুর হাসপাতাল। রোগী এর স্বজনরা জানান, বিনামূল্যে সিজার অপারেশন করতে পারায় আমরা খুব খুশি। কারণ আগে আমরা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেথে হতো, আমাদের পক্ষে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা জোগাড় করা সম্ভব হতো না।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনরা জানান, আগে জানতেন সরকারি হাসপাতালে সেবা নেই। এখানে এসে দেখেন তার উল্টো সুদিপ ভট্টাচার্য ব্যবসায়ী জানান, পরিচ্ছন্ন পরিবেশে ভালো সেবা পেলে মানুষ কখনো প্রাইভেট হাসপাতালে যাবে না।
সুবিনা খাতুন নামের একজন জানান, কর্তৃপক্ষের দক্ষ ব্যবস্থাপনায় আগের সময়ের চেয়ে রোগীরা এখন আন্তরিকতাপূর্ণ সেবা পাচ্ছেন।
জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে এই হাসপাতালে ভালো ভালো মেডিকেল কনসালটেন্ট, রয়েছেন, মেডিকেল অফিসার, আবাসিক মেডিকেল অফিসার স্বাস্থ্য সহকারী ও নার্স নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। এছাড়া উপজেলার ৮ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর সভা রয়েছে আটটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র আটজন ডাক্তার নিয়মিত চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন, অন্যদিকে জগন্নাথপুর উপজেলার বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ গ্রামে ৩০টি গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিচালনায়।
বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা সকাল-বিকাল দুই শিপ্টে চালু আছে। গাইনি বিভাগ, সার্জারি বিভাগ, এনসি ডি, স্যামসহ ফিভার কর্নার, আইএমসিআই, মাতৃস্বাস্থ্য ভাউচার স্কিমসহ অবকাঠামো খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। ফিল্ড লেবেলে ও কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র এবং ইপিআই কার্যক্রমের মাধ্যমে জগন্নাথপুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।
জানতে চাইলে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সারমিন আরা আশা জানান, জগন্নাথপুর উপজেলার জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধ পরিকর। এখন শুধু জগন্নাথপুর উপজেলা নয়, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমিউনিটি ক্লিনিক,কে রোগীরা চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। বৃদ্ধি পেয়েছে জনবল; বৃদ্ধি পেয়েছে সেবার পরিধি। সামনে আরো বেগবান হবে স্বাস্থ্যসেবা। সবার দোয়া ও ভালোবাসা আমার এই চলার পথে পাথেয়। যতদিন আছি সবার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার যোগ্য দেশ পরিচালনায় এগিয়ে যাচ্ছে দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ।
এছাড়া জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়মিত চিকিৎসা সেবার পাশপাশি অত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বল্প মূল্যে নিয়মিত আল্ট্রাসনোগ্রাফি, ইসিজি, এক্সরে, ব্লাড টেস্ট, ইউরিন টেস্ট ডেঙ্গু পরীক্ষাসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করানো হয়।
।